টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতার ইট চুরির ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে চাল চুরির নাটক - ads24bd.com

সর্বশেষ


Tuesday, December 5, 2023

টাঙ্গাইলে আ.লীগ নেতার ইট চুরির ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে চাল চুরির নাটক


অভিযুক্ত আওয়ামীলীগ নেতা আরিফ

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ টাঙ্গাইল সদর থানার ১২ নং মাহমুদ নগর ইউনিয়নে নির্মানাধিন সড়কের ইট নিয়ে নিজ বাড়ির টয়লেট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে বিষয়টি কে ধামাচাপা দিতে ঐ আওয়ামীলীগ নেতা সুকৌশলে ভিজিডিএফ'র কার্ডধারিদের মাঝে বিতরণ কৃত চাল ক্রয় অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসলাম সিকদার কে ফাঁসাতে ৯৯৯ এ কল করে, পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে টাঙ্গাইল সদর থানার এস আই আবুল বাসার ৩০ কেজি ওজনের ২৪ বস্তা চাল সহ দুটি ভ্যান জব্দ করে। 

অভিযুক্ত আরিফের বড়ভাই খোকন 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাহমুদ নগর ইউনিয়ন ৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মৃত মজিদের ছেলে   আরিফ(২৭)  ও তার বড় ভাই খোকন(৫০) এর  চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি চুরি সহ এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে বাধা দেওয়ায় চেয়ারম্যান আসলাম সিকদারের সাথে বরাবরই বিরোধে জড়ান তারা। বিগত দিনে তারা বর্তমান চেয়ারম্যান বিরুদ্ধে অপরপ্রার্থীকে তারা নির্বাচনে জয়ী করতে ব্যার্থ হয়ে বর্তমান চেয়ারম্যানের অবস্থান নেয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে অসংখ্য এলাকাবাসী জানান, আওয়ামীলীগ নেতা  আরিফ ও তার ভাই খোকন মূলত হটাৎ করে চেয়ারম্যান জয়ী হওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছে না। তারা অসৎ কর্মকান্ড বহাল রাখতে বর্তমান চেয়ারম্যান বাধা হয়ে দাড়াচ্ছেন।  তারা তাকে ফাঁসাতে এক-এক  সময় এক-এক রকম হয়রানির ছক ও নানান কৌশল অবলম্বন করছেন যাচ্ছেন এই দুই ভাই। 

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, মাহমুদ নগর ইউনিয়নের মাকোর কোল বাজারে কোন প্রকার ইজারা ছাড়াই  দীর্ঘদিন ধরে তারা দুই ভাই মাছের বাজারের মাছ বিক্রেতা সহ অন্যানো দোকানদারদের কাছ থেকে জোরপূর্বক লাখ লাখ টাকা চাঁদা উত্তোলন করে আসছিল। 

সর্বশেষ ধনিয়া নামের এক সংখ্যালগু হিন্দু  কাপড় ব্যাবসায়ীর কাছে মোটা অংকের চাঁদাদাবি করে এবং তাকে নানা রকম ভয়ভীতি দেখায়।  ওই ব্যাবসায়ী তৎক্ষনাৎ বিষয়টি  মাহমুদ নগর ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম সিকদার কে জানান। চেয়ারম্যান  আসলাম সিকদার তাদেরকে এহেন কার্মকান্ড থেকে তাদের বিরত থাকতে বলেন। 

এই ঘটনায়  আরিফ ও খোকনের চরম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে  চেয়ারম্যানের উপর । 

এই ঘটনার বেশ কয়েকদিন পর ইউনিয়ন পরিষদের তত্বাবধায়নে একটি রাস্তার উন্নয়ন প্রকল্প কাজের ঠিকাদারির দায়িত্ব পান  আরিফ, প্রকল্পটির কাজ শুরু করার কয়েক দিন পরে-ই তিনি লোকচক্ষুর আড়ালে কয়েক শত ইট চুরি করে নিয়ে যান তার বাড়িতে সেখানে সেই ইটনদিয়ে একটি টয়লেট নির্মান করেন । এসময় আহম্মদ আলী  নামে স্থানীয় এক ব্যাক্তি সরকারি কাজের ইট চুরিতে বাধা দিলে তার উপর আক্রমণ করেন তারা। পরে ঘটনাটি জানা জানি হলে ঘটনা স্থলে উপস্থিত হন ইউপি চেয়ারম্যান আসলাম সিকদার।  তিনি বিষয় টি  উপজেলা প্রশাসনকে  অবগত করলে কাজ স্থগিত করার নির্দেশ দেন উপজেলা প্রশাসন। পরদিন টাঙ্গাইল উপজেলা এলজি ইডি  প্রকৌশলী ফজলু রহমান ঘটনাস্থলে আসলে ইট চুরির দায় স্বীকার করে ক্ষমা চান ঠিকাদার আরিফ। 

সেদিনের পর থেকে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যানকে ফাঁসাতে নানা কৌশল ও ছক আঁকেন তাঁরা, এ পর্যায়ে গত ২০-১১-২০২৩ ইং তারিখে ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডিএফ'র চাউল চুরির একটি নাটক  ছড়িয়ে হয়রানি করার চেষ্টা করেন চেয়ারম্যান আসলাম সিকদার কে,  ঘটনার সত্যতা না থাকায় সেদিনও ব্যর্থ হন তাঁরা।

এ ঘটনায় ব্যর্থ হওয়ার পর তারা সোস্যাল মিডিয়া সহ স্থানীয় একটি প্রিন্ট মিডিয়ায় মনগড়া ভিত্তিহীন অপপ্রচার লিপ্ত হন।  

তাদের এ নাটকের মুল বিষয়টি উঠে আসে  প্রত্যক্ষ সাক্ষী ভিজিএফ এর চাল বহনকারি ভ্যান চালক ইব্রাহিম ও শহীদ এবং আজগর আলী  নামের এক চাউল ব্যাবসায়ী সেদিনের ঘটনার বিবরণ থেকে তারা বলেন,  ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিডিএফ'র চাউল  উত্তোলন করতে আসা ব্যাক্তিরা বেশিরভাগ-ই নারী এবং চরাঞ্চল হওয়ায় সচরাচর যানবাহনপাওয়া দুষ্কর ফলে ভিজিএফএর চাল গ্রহীতারা তাদের চাল সংগ্রহ করে অনেকে চাউলের বস্তা বিক্রি করে দেন যে গুলো অনেক ব্যাবসায়ী-ই কিনে নেন। অন্যান্যদের সাথে গত ২০-১১-২৩ তারিখে  আমিও ২৪ বস্তা চাউল কিনে ভ্যানে করে খুচরা বিক্রির উদ্দেশ্যে  শাহজানি বাজারের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু রাস্তায় পরিকল্পিত ভাবে আমার ভ্যান আটক করে বসেন মৃত মজিদের বড় ছেলে খোকন তার ভাই আরিফ ও তাদের সহযোগীরা। 

 এসময় তারা আমার সাথে থাকা ভ্যান চালক ইব্রাহিম ও শহীদেকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও টাকার প্রলোভন দেখিয়ে চেয়ারম্যান আসলাম সিকদার চাউলের বস্তা গুলো বিক্রি করতে পাঠিয়েছে  বলে স্থানীয়দের কাছে প্রচার করতে বলে, আমরা তাদের শেখানো মিথ্যা বলতে রাজি না হওয়ায়  তাঁরা  ৯৯৯ কল করে পুলিশ নিয়ে আসেন পরে আমি ভয় পেয়ে সেখান থেকে চলে যাই । পরে  জানতে পারি আমার  কেনা ২৪ বস্তা চাউল সহ ভ্যানটি পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে গেছে যা এখনো থানা হেফাজতে আছে। সত্যি কথা বলতে আমি সেদিন খুব ভয় পেয়ছিলাম তাই সামনে আসিনি তবে যা সত্য আজ তাই বলছি। চাউল ব্যাবসায়ী আজগর আলী সাথে ভ্যান চালক ইব্রাহিম ও শহীদ এক-ই বক্তব্য দিয়ে বলেন এখানে চেয়ারম্যান সাহেবের কোন হাত নেই আমাদেরকে খোকন, আরিফ ও তাদের লোকজন এসব বলতে বলেছিল । এই  স্বীকারোক্তি মূলক বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ এই প্রতিবেদকের কাছে করেছে। 

এ ঘটনার সত্যতা জানতে প্রকৌশলী ফজলু রহমান' র সাথে মুঠো ফোনে  যোগাযোগ করা হলে মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। 

আরিফ ও খোকনের সাথে যোগাযোগ করা হলে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি আরিফ বলেন, আমি ইট বাড়িতে নিয়ে গেছি এটা সত্য তবে চেয়ারম্যান বিষয়টি জানেন আর চাউলের ঘটনাটি মূলত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, সরকারি চাউল ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিল দেখে আমার বড় ভাই খোকনের সন্দেহ হয়েছিল তাই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল কিন্তু সেখানে চেয়ারম্যান এর নাম বা অন্য কারোর নাম উল্লেখ করা হয়নি, চাদাঁবাজীর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি আসলে ওইরকম কিছু না সেটা মিমাংসা হয়ে গেছে। 

এ বিষয়ে  মাহমুদ নগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসলাম সিকদারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেদিন ভিজিএফ এর চাউলের বস্তা আটকের ঘটনাটি আমি জানার সঙ্গে সঙ্গে তৎক্ষনাৎ  ইউএনও স্যার কে অবহিত করি। মূলত বিষয়টি হচ্ছে আমাদের পরিষদ থেকে বিতরণ কৃত চাল কে বা কাহারা কিনেছে এবং কে ভ্যানে করে নিয়ে যাচ্ছিলো তা আমার জানা নেই। 

বিষয়টি উপজেলা পরিষদ অবহিত হবার পরে বেশকয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত প্রাপ্ত চাল বিতরণ কৃত চাল এবং আমাদের পরিষদে থাকা চালের তালিকা মিলিয়ে দেখেন এবং সেখানে কোন গড়মিল খুঁজে পাননি। সেখানে তারা চাল চুরি করে বিক্রির কোন সত্যতা খুঁজে পায়নি এবং কি পরিষদের প্রতিটি রেজিস্ট্রার চেক করে  কোন ত্রুটি খুজে পায়নি।   

তিনি বলেন, একটি কুচক্রী মহল আমার সুনাম ক্ষুন্ন করতে আমি নির্বাচিত হবার পর থেকেই উঠে পড়ে লেগেছে। আমি নির্বাচিত হই তা তারা চায়নি।

তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাদের  অপরাধ মূলক কর্মকান্ড গুলোকে আমি বাঁধা দেওয়ায় তারা  আমার উপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ। 

 তারা গত ২০শে নভেম্বর ভিজিএফ চাল আটকের ঘটনাটি তে আমাকে জড়িয়ে  সোস্যাল মিডিয়া সহ  স্থানীয় একটি পত্রিকায় সম্ভাবত অর্থের বিনিময় মিথ্যা সাজানো সংবাদ প্রকাশ করে আমার সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে ।  

এ সময় তিনি আরো বলেন উপরে আল্লাহ আছে কেউ কারো ক্ষতি করে পার পাবে না। আমার সাথে আমার এলাকার জনসাধারণ আছে। আমি রাজনীতি বাইরের মানুষ ছিলাম। 

এই ইউনিয়নের জনসাধারণ আমাকে তাদের জন্য কাজ করতে ইউপি নির্বাচন দাড় করিয়েছে  তারা আমাকে বিপুল ভোটে জয়ি করেছে। আমি তাদের নিকট কৃতজ্ঞ, তারাই এসব দুর্ণীতিবাজ সন্ত্রাসিদের দাঁতভাঙ্গা জবাব দিবে।

আমি শুধু অত্র ইউনিয়নবাসি ও প্রশাসন কে ঐ সকল ব্যাক্তিদের প্রতি নজরদারিতে রাখার আহবান জানাবো। 

এসময় চেয়ারম্যান আসলাম সিকদারের নামে মিথ্যা তথ্য প্রচারকারিদের বিরুদ্ধে নিন্দা জ্ঞাপন করেন। 

Post Bottom Ad

Responsive Ads Here

Pages